নতুন বছর ২০২৫: বাংলাদেশে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতি

নতুন বছর ২০২৫: বাংলাদেশে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতি

0
39
ডিজিটাল-বাংলাদেশ ফাইল ফটো

বাংলাদেশ ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগের নতুন অধ্যায় শুরু করে। যদিও এর মাধ্যমে বিগত  সৈরাচারী সরকার তাদের লুটপাটের মহোৎসব চালিয়ে গেছে। তথাপি বাংলাদেশের মানুষের নিজস্ব প্রচেষ্টায় গত চার বছরে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে এবং এখন দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে।

ই-গভর্নেন্সের মাধ্যমে সেবা সরবরাহের সহজীকরণ

২০২৫ সালে বাংলাদেশের সরকারি সেবাগুলো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আনা হয়েছে, যা নাগরিক সেবা প্রাপ্তি সহজতর করেছে। ভূমি রেকর্ড, জাতীয় পরিচয়পত্র, এবং কর সেবা ইত্যাদি এখন অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে, “একসেবা” প্ল্যাটফর্মটি সকল সরকারি সেবা এক ছাদের নিচে এনেছে। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ঘরে বসেই সেবা নিতে পারছেন।

স্মার্ট গ্রাম উন্নয়ন প্রকল্প

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রযুক্তির প্রসার ঘটাতে স্মার্ট গ্রাম উন্নয়ন প্রকল্প চালু করা হয়। এ প্রকল্পের অধীনে ২০২৫ সালে প্রায় ৫০,০০০ গ্রামের ইন্টারনেট সংযোগ, ডিজিটাল শিক্ষার ব্যবস্থা এবং অনলাইন হেলথকেয়ার সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। গ্রামের মানুষেরা এখন কৃষি পরামর্শ, আবহাওয়ার তথ্য, এবং বাজারদরের আপডেট নিয়মিত পাচ্ছেন।

শিক্ষা খাতে প্রযুক্তির প্রভাব

শিক্ষা খাতে প্রযুক্তি ব্যবহার বৃদ্ধি পায়, বিশেষ করে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে। ২০২৫ সালে দেশের সকল বিদ্যালয়ে স্মার্ট ক্লাসরুম চালু হয়েছে। ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম যেমন “মাইস্টাডি” এবং “জাতীয় ডিজিটাল ক্লাসরুম” শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিপ্লব নিয়ে এসেছে। এছাড়া কারিগরি শিক্ষার জন্য ভার্চুয়াল ল্যাবের ব্যবহার ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং ই-কমার্সের প্রসার

ডিজিটাল বাংলাদেশের হাত ধরে ই-কমার্স সেক্টর বিশাল পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে। ২০২৫ সালে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে দেশের প্রায় ৭০% গ্রাহক অনলাইন কেনাকাটায় অভ্যস্ত। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে, যেখানে তরুণ প্রজন্ম বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে।

ডিজিটাল ব্যাংকিং ও মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সেবা

মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সেবার (এমএফএস) ব্যবহার ২০২৫ সালে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বিকাশ, নগদ, এবং অন্যান্য ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে গ্রামের কৃষক থেকে শুরু করে শহুরে ব্যবসায়ী পর্যন্ত সবাই আর্থিক লেনদেন করছেন। “স্মার্ট ব্যাংক” উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের ব্যাংকগুলো কাগজবিহীন লেনদেন কার্যকর করেছে।

চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগে অনেক সাফল্য থাকলেও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকি, ডিজিটাল ডিভাইড, এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য প্রযুক্তি সহজলভ্য করার বাধাগুলো এখনো একটি বড় সমস্যা। ২০২৫ সালে সরকার এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগ ২০২৫ সালে এসে দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, এবং প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। প্রযুক্তি-নির্ভর অর্থনৈতিক মডেল এবং ই-গভর্নেন্স সিস্টেম বাংলাদেশকে একটি নতুন দিগন্তে নিয়ে গেছে। আগামী দিনগুলোতে এ উদ্যোগের আরও প্রসার আশা করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here