১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় খালাস পেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।

১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় খালাস পেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।

0
23
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর

 ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় হাইকোর্টের রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সহ আরও পাঁচজন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।এই রায়ের ফলে বাবরের মুক্তির পথে আর কোনো বাধা রইল না। এছাড়া, গত ১৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় হাইকোর্টে ৬ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে, মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ৬ আসামির সাজা কমিয়ে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলার শুনানি শেষে এই রায় ঘোষণা করেন। আদালত শুনানির পর বাবরসহ পাঁচজনকে খালাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে বাবরের মুক্তি নিশ্চিত হয়ে ওঠে।

বাবরের পক্ষে রায়দানের আগে আইনজীবী শিশির মনির আদালতে খালাস চেয়ে আবেদন করেন। তিনি আদালতে বলেন, “এই মামলায় আমার ক্লায়েন্টের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। তাই, আদালত তার খালাসের আদেশ দিয়েছে।” রাষ্ট্রপক্ষের  শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আসিফ ইমরান জিসান। তারা আদালতে উপস্থাপন করেছেন যে, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে বিভিন্ন প্রমাণ রয়েছে। তবে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে খালাসের রায় ঘোষণা করেছে। চট্টগ্রামের ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলার ঘটনা ২০০৪ সালের। ওই বছর চট্টগ্রামের একটি বন্দরের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র চোরাচালান হওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই অস্ত্রগুলো ভারতের আসাম রাজ্যের উলফা সংগঠনের হাতে ব্যবহৃত হওয়ার কথা ছিল বলে সন্দেহ করা হয়।

মামলাটি দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চলছিল এবং বিভিন্ন আসামির বিরুদ্ধে শাস্তির রায় দেওয়া হয়েছিল। তবে আদালতের তদন্ত শেষে কিছু আসামির বিরুদ্ধে প্রমাণের অভাব এবং অন্য কিছু আইনি কারণে তাদের খালাস দেওয়া হয়। এর মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর অন্যতম ছিলেন। এই মামলায় কয়েকজন আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছিল। তবে হাইকোর্টে আপিল শুনানির পর, আদালত তাদের সাজা কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছে। এর মধ্যে একজন ছিলেন ভারতের উলফা সংগঠনের সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া। তাকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

২০১৪ সালে, চট্টগ্রামের ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করার পর বাবরের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে বাবরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলার শুনানি চলছিল। প্রথমে মামলায় তার শাস্তি ছিল কিন্তু পরে বেশ কিছু আইনি জটিলতার কারণে সে মামলায় খালাস পেল। বর্তমানে বাবর এবং অন্যান্য খালাস পাওয়া আসামিরা মুক্তির পথে রয়েছেন। এ বিষয়ে আইনজীবী শিশির মনির জানান, “আমরা বিচারককে ধন্যবাদ জানাই এবং আশা করি, আইনি প্রক্রিয়া সঠিক পথে চলবে।” বাবরের আইনজীবীরা জানান, তিনি একাধিক মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন, ফলে তার মুক্তি পেতে আর কোনো বাধা রইল না। তবে, সরকার ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেন, তবে এখনকার পরিস্থিতিতে বাবরের মুক্তি নিশ্চিত বলে মনে হচ্ছে।

বর্তমানে বাবর এবং অন্য খালাস পাওয়া আসামিরা মুক্তির অপেক্ষায়। তাদের মুক্তি পরবর্তী কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা দেখার অপেক্ষায়। তবে দেশের রাজনৈতিক ও আইনগত প্রেক্ষিতে এই মামলার পরিণতি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। এটি শুধু একটি বিচারিক প্রক্রিয়ার বিষয় নয়, বরং এটি বাংলাদেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থার প্রেক্ষিতেও গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here