গাজীপুর নগরের কোনাবাড়ী পারিজাত এলাকায় বৃহস্পতিবার ভোরে একটি ঝুটের গোডাউনে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ফায়ার সার্ভিসের প্রচেষ্টায় প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টার পর সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্য অনুযায়ী, ভোর চারটার দিকে পারিজাত এলাকার ঝুটের গোডাউন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে। স্থানীয়রা প্রথমে নিজেরাই আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। পরে কোনাবাড়ী মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এবং সারাবো মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের ওয়ার হাউস পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানান, ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে একযোগে কাজ শুরু করে। ভোর চারটার পর থেকে টানা প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টার পর সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
সকাল আটটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও “ডাম্পিং” অর্থাৎ সম্পূর্ণ নির্বাপণের কাজ এখনো চলমান। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করতে সময় লাগবে। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ঝুটের মতো দাহ্য পদার্থে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পারিজাত এলাকায় গড়ে ওঠা বড় আকারের ঝুট ও কাপড়ের গোডাউনগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। এ ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তারা জানিয়েছেন, এলাকায় পর্যাপ্ত অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লেগেছে।
দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ঝুট ও কাপড়ের মতো দাহ্য পদার্থ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকলে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গেলেও গোডাউনের মালিকদের উচিত ভবিষ্যতে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে বৈদ্যুতিক লাইনের মান নিয়ন্ত্রণ ও সময়মতো রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরি।
এই ঘটনা গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় ঝুট ও কাপড়ের ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বড় সতর্ক সংকেত। স্থানীয় প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ ধরনের ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।